নরসিংদীর রায়পুরায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া তরুণ চিকিৎসক ডা. সজিব সরকারের কবর সরকারি বরাদ্দ ও প্রশাসনিক আশ্বাস থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় প্রভাবশালী মহল ও কবরস্থান কমিটির বাঁধার কারণে পাকাকরণের উদ্যোগ থমকে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত ১৮ জুলাই ঢাকার আজমপুরে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন রায়পুরার মেঝেরকান্দি গ্রামের সন্তান ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজের লেকচারার ডা. সজিব সরকার। পরে তাকে চরসুবুদ্ধি ইউনিয়নের সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, রায়পুরার পাঁচজন শহীদকে নিজ নিজ এলাকায় দাফন করা হয় এবং তাদের কবর সংরক্ষণ ও পাকাকরণের জন্য সরকার থেকে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। একই বরাদ্দে অন্য চার শহীদের কবর পাকাকরণ শেষ হলেও শুধু ডা. সজিবের কবর স্থানীয় প্রভাবশালী মহল ও কবরস্থান কমিটির বাঁধার কারণে এখনো কাঁচা পড়ে আছে।
শহীদের পিতা মো. হালিম সরকার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “দেশের জন্য জীবন দিল আমার ছেলে, অথচ তার কবর আজও কাঁচা পড়ে আছে। নানা অজুহাতে বাধা দেওয়া হচ্ছে, এমনকি নেইমপ্লেট ও ফুলগাছও উপড়ে ফেলা হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি, সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ দরকার।”
স্থানীয় সচেতন মহলও বিষয়টি নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, দেশের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া এক তরুণ চিকিৎসকের কবর পাকাকরণ না হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জাজনক।
কবরস্থান কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন এ বিষয়ে জানান, “আমাদের কাছে কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি। এলাকাবাসীর চাপ থাকায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। তবে জনগণ অনুমতি দিলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদ রানা বলেন, “ডা. সজিবের কবর পাকাকরণের জন্য সরকারি বরাদ্দ ও ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় বাঁধার কারণে কাজ এগোয়নি। কবরস্থান কমিটিকে বিষয়টি জানানো হলেও তারা সহযোগিতা করেনি। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে ছোট ভাইকে আনতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান ডা. সজিব সরকার। তার মৃত্যুর পর পরিবার, সহকর্মী ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।
সম্পাদক ও প্রকাশক : নাজমুল হাসান মোল্লা
মোবাইল : ০১৯১১৯৪৬২৫২, ০১৮৯১৬৮৪৪৪৪
ইমেইল : narsingdirpatrikanews@gmail.com
Copyright © 2025 নরসিংদীর পত্রিকা. All rights reserved.